Blood Test: বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১ শতাংশ অর্থাৎ ৮ কোটি মানুষ বাইপোলার ডিসঅর্ডারে ভুগছেন। এঁদের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষেরই ভুল রোগ নির্ণয় হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ধরে নেওয়া হচ্ছে তাঁরা ডিপ্রেশনের শিকার। এই ভুল এড়াতে রক্ত পরীক্ষা সাহায্য করতে পারে।
মন খারাপ, হতাশাকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানসিক অবসাদ (Depression) হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে এগুলো হয় লক্ষণ মাত্র। অনেক সময় বাইপোলার ডিসঅর্ডারে লক্ষণও হয় চরম হতাশা। কিন্তু বাইপোলার ডিসঅর্ডার রোগ চট করে ধরতে পারেন না চিকিৎসকেরা। তাই ভুল চিকিৎসাও হয়ে যায়। তবে, সাম্প্রতিকতম গবেষণা বলছে, রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে বাইপোলার ডিসঅর্ডার নির্ণয় করা সম্ভব।
মন খারাপ মানেই ডিপ্রেশন নয়
সবার মাঝে হইহুলোড় করতে দেখলে মনে হয়, মানুষটা খুব আনন্দে, খুশিতে রয়েছে। কিন্তু একা থাকলেই, মুহূর্তের মধ্যে আবার ডুবে যায় অন্ধকারে। দিনের পর দিন হতাশায় ভুগতে থাকে। বাইপোলার ডিসঅর্ডার হল এমন ধরনেরই এক মনের অসুখ। বিভিন্ন কারণে মানুষকে হতাশা গ্রাস করতে পারে। এছাড়া এই রোগের পারিবারিক ইতিহাস থাকলেও আপনি বাইপোলার ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত হতে পারেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, বাইপোলার ডিসঅর্ডার প্রাথমিক স্তরে ধরা পড়ে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ধরে নেওয়া হয় রোগী ডিপ্রেশন বা অবসাদে ভুগছেন। তাই চিকিৎসক ডিপ্রেশনেরই চিকিৎসা করেন। কিন্তু সবসময় সেটা হয় না। অনেক ক্ষেত্রে রোগী বাইপোলার ডিসঅর্ডারের শিকারও হন।
মন খারাপ মানেই ডিপ্রেশন নয়
বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১ শতাংশ অর্থাৎ ৮ কোটি মানুষ বাইপোলার ডিসঅর্ডারে ভুগছেন। এঁদের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষেরই ভুল রোগ নির্ণয় হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ধরে নেওয়া হচ্ছে তাঁরা ডিপ্রেশনের শিকার। এই ভুল এড়াতে রক্ত পরীক্ষা সাহায্য করতে পারে। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষণা বাইপোলার ডিসঅর্ডার ও রক্ত পরীক্ষা নিয়ে গবেষণা করছেন। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ‘জামা সাইকায়াট্রি’ জার্নালে।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষণায় ৩ হাজার রোগীর মানসিক অবস্থা বিশ্লেষণ করা হয়। তাঁদের অতীত, বর্তমান, পরিবারের ইতিহাস ইত্যাদি নিয়ে ৬০০টি প্রশ্ন করা হয়। এরপর ৩ হাজার জনের মধ্যে ১ হাজার অংশগ্রহণকারীর রক্ত পরীক্ষা করা হয়। ‘মাস স্পেকট্রোমেট্রি’ পদ্ধতির সাহায্যে রক্ত উপস্থিত ৬০০ মেটাবোলাইটস ( এক ধরনের বিপাকজাত পদার্থ পদার্থ) বিশ্লেষণ করা হয়। সেখানেই রোগীর রক্তে একটি বায়োমার্কার খুঁজে পাওয়া যায়। এই বায়োমার্কারই বাইপোলার ডিসঅর্ডার শনাক্ত করতে সাহায্য করবে। যদিও এখনও এই বিষয়টা নিয়ে গবেষণা চলছে। তবে, গবেষকদের মতে, এই রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে বাইপোলার ডিসঅর্ডার নির্ণয় করা সম্ভব।
মন খারাপ মানেই ডিপ্রেশন নয়
গবেষণার নেতৃত্বে থাকা অধ্যাপক সেবিন বানের মতে, বাইপোলার ডিসঅর্ডারের সঙ্গে মানসিক অবসাদের মিল থাকলেও দু’টোর চিকিৎসা পদ্ধতি আলাদা। বরং, যদি বাইপোলার ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত রোগীকে অ্যান্টিডিপ্রেস্যান্ট দেওয়া হয় এবং মুড স্টেবিলাইজ়ার না দেওয়া হয়, তাহলে রোগীর মানসিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটতে পারে। এই কারণেই ডিপ্রেশন ও বাইপোলার ডিসঅর্ডার সঠিকভাবে নির্ণয় করা দরকার। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা ঘটে না।
মন খারাপ মানেই ডিপ্রেশন নয়
প্রথমত, মানসিক অবসাদ ভুগলে খুব কম মানুষই চিকিৎসার সাহায্য নেন। এরপর যেসব ব্যক্তি ডাক্তারের কাছে যান, তাঁরা মনের হাইপারঅ্যাকটিভ অংশটা চিকিৎসকের কাছে খুলে বলেন না। ফলে, চিকিৎসকের পক্ষেও বাইপোলার ডিসঅর্ডার নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়ে। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ধরে নেওয়া হয় যে রোগী ডিপ্রেশনে আক্রান্ত। কিন্তু রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে যদি বাইপোলার ডিসঅর্ডার নির্ণয় করা যায়, তাহলে চিকিৎসা করতেও ডাক্তারদের সুবিধা হবে।